আপা চলে যাবার পর যারা খাড়ার উপর পল্টি মারলো
আপা চলে যাবার পর যারা খাড়ার উপর পল্টি মারলো
আপা চলে যাবার পর যারা খাড়ার উপর পল্টি মারলো
আপা (শেখ হাসিনা) যদি রাজনীতি থেকে সরে যান বা চলে যান, তাহলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তনের বিশ্লেষণ কয়েকটি মূল দিক থেকে করা যেতে পারে:
১. আওয়ামী লীগের ভেতরের বিভাজন
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। এখন পর্যন্ত দলটি মূলত তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু ভবিষ্যতে সম্ভাব্য নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হবে।
ওবায়দুল কাদেরের মতো প্রবীণ নেতারা নেতৃত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করতে পারেন।
সম্ভাব্য নতুন মুখ (যেমন জয় বা দলের অন্য সিনিয়র নেতারা) উঠে আসতে পারেন।
ভেতরের বিভিন্ন উপদল (বিকল্প মতাদর্শ ও গোষ্ঠী) সক্রিয় হয়ে বিভক্তি ঘটাতে পারে।
২. বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান?
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব সংকট হলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নিতে পারে। তবে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নেতৃত্ব সংকট থাকায় এটি নিশ্চিত নয়।
তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে চাইতে পারেন, কিন্তু জনপ্রিয়তা কতটা ধরে রাখতে পারবেন, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামপন্থী দল নিজেদের অবস্থান পুনর্গঠনের চেষ্টা করতে পারে।
নবগঠিত রাজনৈতিক শক্তিগুলো (যেমন গণতন্ত্র মঞ্চ) সুযোগ নিতে চাইবে।
৩. পল্টিবাজ রাজনীতিবিদদের নতুন অবস্থান
রাজনীতিতে স্বার্থবাদীরা সব সময় সুবিধামতো অবস্থান নেন। যদি আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়, তাহলে অনেকে বিএনপি বা তৃতীয় শক্তির দিকে ঝুঁকতে পারেন।
আওয়ামী লীগে থাকা কিছু নেতা হয়তো চুপিসারে বিএনপি বা অন্য কোনো শিবিরে যাওয়ার পথ খুঁজবে।
অতীতে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা অনেকে (যেমন সাবেক মন্ত্রী, এমপি) আবার বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা করতে পারেন।
ব্যবসায়ী ও আমলাতন্ত্রের একটি বড় অংশ তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবে।
৪. সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ভূমিকা
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
যদি আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের সংকট তীব্র হয়, তাহলে প্রশাসনের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিতে পারে।
সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ থাকবে, নাকি নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল হবে, তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর।
নতুন রাজনৈতিক শক্তিগুলোর উত্থান হলে প্রশাসন তাদের সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পারে, তা দেখার বিষয় হবে।
৫. তরুণ ভোটার ও নতুন রাজনীতি
বর্তমান তরুণরা শেখ হাসিনার পরবর্তী নেতৃত্বে কাকে দেখতে চায়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
তারা কি বিএনপির দিকে যাবে, নাকি নতুন কোনো বিকল্প খুঁজবে?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-ভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন কি বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে?
বিদেশি শক্তির (ভারত, চীন, পশ্চিমা বিশ্ব) ভূমিকা কী হবে?
চূড়ান্ত ভাবনা
শেখ হাসিনার চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে। যারা এতদিন তার ছায়ায় ছিল, তাদের অনেকেই হয়তো নতুন পথ খুঁজবে। কেউ পল্টি মারবে, কেউ নতুন দল গঠন করবে, কেউ পুরনো শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে। তবে কে আসল বিজয়ী হবে, তা নির্ভর করবে নেতৃত্বের গুণাবলি, সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থনের ওপর।
আপনার কী মনে হয়, পরবর্তী নেতৃত্ব কাদের হাতে গেলে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে?

Comments
Post a Comment